এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন,লামাঃ
বান্দরবানের লামায় এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের করে নিয়ে গিয়ে লামা পৌরসভার শিলেরতুয়া এলাকায় মুরুইতং হিল রিসোর্টের কক্ষে বেঁধে রেখে মুক্তিপণ ১লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবীর ঘটনায় পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল রোজ বৃহস্প্রতিবার লামা থানায় কলেজ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে পাঁচ জনকে আসামী করে মামলা রুজু করেছে।
এ ঘটনায় যাদের আসামী হলো- ১। মিফতা উদ্দীন মাহি (১৯), পিতা-জসিম উদ্দিন, মাতা-আসমাউল হুসনা মুন্নি, সাং-বমু বিলছড়ি পশ্চিম পাড়া, ০১ নং ওয়ার্ড, বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ২। হাসান মাহমুদ (২৩), পিতা-সাইদুর রহমান, মাতা-হুমায়ারা বেগম, সাং-শীলেরতুয়া, ওয়ার্ড নং-০১, রূপসীপাড়া ইউনিয়ন, ৩। ইয়াছিন আরাফাত শুভ (২২), পিতা-শহিদ খান, সাং-চেয়ারম্যান পাড়া, ওয়ার্ড নং-০৪, লামা পৌরসভা, ৪। ইফাত (২৬), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-মধুঝিরি, ০৭নং ওয়ার্ড, লামা পৌরসভা, ৫। আরমান (২৫), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-অজ্ঞাত, সর্ব থানা-লামা, জেলা-বান্দরবান সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২থেকে৩ জন।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে লামা পৌরসভার শিলেরতুয়া মুরুংতং রিসোর্ট থেকে ১নং আসামী মিফতা উদ্দীন মাহি(১৯) ও ২নং আসামী হাসান মাহমুদ (২২)কে গ্রেপ্তার করে লামা থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত ৯/০৪/২০২৫ইং তারিখ বেলা আনুমানিক ১১:০০ ঘটিকা হইতে সন্ধা ০৬:০০ ঘটিকার মধ্যে। ঘটনারস্থল- লামা থানাধীন লামা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেইন গেইটের সামনের রাস্তা ও মুরুইতং হিল রিসোর্ট এর জুম ঘরে।
মামলার বাদী কলেজ ছাত্রীর মা’র লিখিত মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদীর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে গত ০৯/০৪/২০২৫ইং তারিখ অনুমান সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময় আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস আমাদের বাড়ী হইতে লামা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিকট রাসেল স্যারের সাথে কোচিং করার বিষয়ে আলাপ করার জন্য রওনা হইয়া আসে। দুপুর ১২ ঘটিকার সময় আমার মেয়ে বাড়ীতে না আসায় আমার ব্যবহৃত মোবাইল হইতে আমার মেয়ের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে তাহার দেরী হওয়ার কারন জিজ্ঞাসা করার জন্য কয়েকবার ফোন করি। আমার মেয়ে ফোন রিসিভ করে নাই। আছরের নামাজের পরে আমি পুনরায় আমার মেয়েকে ফোন করিলে আমার মেয়ে জান্নতুল ফেরদৌস ফোন রিসিভ করিয়া চিৎকার দিয়া আমাকে বলে যে, “মা আমাকে বাচাঁও এরা কয়েক জন মিলে আমাকে মারিয়া ফেলিতেছে” বলে চিৎকার করিতে থাকে। ঐ সময়ে ৩ নং আসামী ইয়াছিন আরাফাত শুভ আমার সাথে মোবাইলে কথা বলিয়া জানায় যে, আমার মেয়েকে ছাড়াইয়া নিতে হইলে ১ লাখ টাকা মুক্তিপন দিতে হবে। পরে আমি বলি যে এত টাকা আমার নিকট নাই বলিয়া জানাইলে সে আমাকে বলে, আপনার মেয়েকে অসামাজিক কাজের কারণে আটক করা হয়েছে। তাহাকে ছাড়াইয়া নিতে হইলে ৫০হাজার টাকা মুক্তিপন লাগিবে বলিয়া ফোন কাটিয়া দেয়। এ ঘটনায় আমি দিশেহারা হইয়া লামা থানায় আসিয়া ঘটনাটি পুলিশকে জানাই। কিছুক্ষণ পরে আমার কাছে আরেকটি ফোন আসে, তখন ঐ ব্যক্তি জানায়, আপনার মেয়েকে শীলেরতুয়ার কাছে কয়েকজন লোক একটি রিসোর্টে মুক্তিপনের জন্য আটক করিয়া রাখিয়াছে। বিষয়টি আমি লামা থানা পুলিশকে জানাই। তখন থানা হইতে তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশ গিয়ে আমার মেয়েসহ ১ ও ২ নং আসামীকে থানায় নিয়ে আসে। আমার মেয়েকে থানায় নিয়ে আসিবার পরে আমার মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া জানিতে পারি যে,১ নং আসামী ও ২ নং আসামী পূর্ব পরিচিত। ১ নং আসামী ২ নং আসামীকে বলে যে, আগামীকাল ০৯/০৪/২০২৫ইং তারিখ আমার বান্ধবীকে নিয়া আপনার রিসোর্টে আসবো। সেই মতে উক্ত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৯এপ্রিল সকাল ১০.৩০ ঘটিকার সময় লামা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেইন – গেইটের সামনের রাস্তা হইতে ০১ নং আসামী আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে মিরিঞ্জা এলাকায় বেড়ানোর কথা বলে ফুসলাইয়া অপহরণ করিয়া নিয়ালামা পৌরসভার শিলেরতুয়া এলাকায় “মুরুইতং হিল রিসোর্ট” নামক একটি কটেজ এর জুমঘরে আটক করিয়া মুক্তিপন দাবী করে। মামলার এজাহারনামীয় ০১ হইতে ০৫ নং আসামীগণ পরস্পর যোগসাজসে একে অপরের সহযোগিতায় একই উদ্দেশ্য আমার নাবালিকা মেয়েকে (কলেজ পড়ুয়া) ফুসলাইয়া ও ভুল বুঝাইয়া কৌশলে অপহরণ করিয়া মুক্তিপন আদায়ের উদ্দেশ্য লামা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেইন গেইটের সামনের রাস্তা হইতে অবৈধভাবে “মুরুইতং হিল রিসোর্ট” নামক কটেজের জুমঘরে আটক করিয়া রাখে। এ ঘটনায় লামা থানার মামলা নং ৫, তারিখ ১০/৪/২০২৫ ইং।
এ ব্যাপারে লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য আসামিদেরও গ্রেফতার করা হবে।